নিজের হাতের তালু ও আঙুলগুলির দিকে ভাল করে তাকান। কী দেখতে পাচ্ছেন? উত্তরে যদি বলেন, শুধু হাতটাই দেখছেন, তাহলে ভুল দেখেছেন। কারণ আপনার হাতেই লুকিয়ে রয়েছে জাদু। না, সেই জাদু প্রয়োগের জন্য আপনাকে পেশাদার জাদুকর হতে হবে না। খাবার খাওয়া, লেখালিখি, বুনন ইত্যাদির জন্য যেমন নিজের হাতকে ব্যবহার করেন, তেমনভাবে একে কাজে লাগিয়ে মুক্তি পেতে পারেন বিভিন্ন রোগ যন্ত্রণা থেকেও। অর্থাৎ হাতের সঠিক ব্যবহার জানা থাকলে কথায় কথায় আর ওষুধ খেতে হবে না। রাতবিরেতে ডাক্তারের কাছেও ছুটতে হবে না। গবেষণা বলছে, নিখরচায় সুস্থ জীবনযাপন করতে আপনার হাত বড় ভূমিকা নিতে পারে। ভাবছেন তো, এমনটা কীভাবে সম্ভব?
বুড়ো আঙুল: মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা? কোনও কারণে অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে আছেন? এর কারণ হতে পারে আপনার বুড়ো আঙুল। বাঁ-হাতে বুড়ো আঙুলকে ডান হাত দিয়ে (অথবা উলটোটা) পাঁচ মিনিটের জন্য চেপে ধরে থাকুন। পাঁচ মিনিট পর যন্ত্রণা অনেকটাই কম অনুভূত হবে।
তর্জনি: হতাশা, ভয় এবং লজ্জা দূর করতে এই আঙুলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি পেশির কোনও অংশে ব্যথাও দূর করতে পারে হাতের এই আঙুল। মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, রোগীদের পিঠ ও পেশির ব্যথার দারুণ কাজ দেয় আঙুলের রিফ্লেক্স থেরাপি। এর জন্য একইভাবে পাঁচ মিনিটের জন্য তর্জনিকে চেপে ধরে রাখতে হবে।
মধ্যমা: ধরুন, প্রেমিকের সঙ্গে মন কষাকষি বা দাম্পত্য কলহে বেশ মেজাজ গরম। অথবা অন্যান্য দিনের থেকে বেশি খাটনি হওয়ায় বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। গবেষণা বলছে, এর থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন মধ্যমার এক্সারসাইজ। পাঁচ মিনিট মধ্যমা চেপে ধরে রাখলে রক্তচাপ খানিকটা কমে। যা আপনার মাথা ঠান্ডা করে আপনাকে শান্ত করে।
অনামিকা: দুশ্চিতা ও দুঃখ দূর করতে দারুণ কাজ দেয় রিফ্লেক্স থেরাপি। যা প্রয়োগ করতে হয় অনামিকার উপর। পাঁচ মিনিট আঙুলটি চেপে ধরে রাখলেই অনেকটা স্বস্তি বোধ করবেন আপনি। পরীক্ষা করে দেখুন, আপনার শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত স্বাভাবিক হবে।
কনিষ্ঠা: খারাপ চিন্তা, ক্লান্তি দূর করতে পারে কনিষ্ঠা। পাঁচ মিনিট কনিষ্ঠা চেপে রাখার সময় অবশ্যই মনে মনে ভাল কিছু চিন্তা করুন।
হাতের তালু: এক হাত দিয়ে অন্য হাতের তালুতে রাখুন। এবার খুব ধীরে ধীরে গোল করে তালুতে মাসাজ করুন। এই প্রক্রিয়ার সময় জোরে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিন। রিফ্লেক্সোলজিস্টদের মতে, আপনার আবেগ ও অনুভূতি তালুতে বন্দি থাকে। গবেষণা বলছে, নিয়মিত তালুতে মাসাজ করলে ক্লান্তি, ডায়রিয়া এমনকী কোষ্ঠকাঠিন্যও দূরে থাকে।
জোড়া তালু: সাধারণত ধ্যান করার সময় হাত জড়ো করা হয়ে থাকে। এতে মনোসংযোগ বাড়ে। হাতের তালু পরস্পরের সঙ্গে চাপলে শরীরের রক্ত চলাচলও স্বাভাবিক থাকে।
সূর্য মুদ্রা: হাত সোজাভাবে রেখে শুধু অনামিকা তালুতে ঠেকিয়ে রাখা সূর্য মুদ্রা হিসেবে পরিচিত। এই প্রক্রিয়া হজম শক্তি ও খিদে বাড়ায়।
Alamgir Alam
Expert of Acupressure and Naturopathy
29 Bangabandhu Avenue, 2nd Floor, Dhaka