মেরুদন্ডের ব্যথা একটি বিশেষ পরিচিত উপসর্গ । মেমূলত কোমর , ঘাড় ও পিঠের ব্যথাকে মেরুদন্ডের ব্যথা হিসেবে ধরা হয় । সমীক্ষায় দেখা গেছে , সারাজীবনে কোনো না কোনো সময় এই ব্যথায় ভোগেননি এমন মানুষের সংখ্যা নগণ্য , মাত্র কুড়ি শতাংশ । অনেক ক্ষেত্রে এই ব্যথা সাধারণ চিকিৎসায় যেমন ব্যথা কমাবার ওষুধ প্রয়ােগে বা ফিজিওথেরাপিতে কমে গেলেও প্রায় ষাট শতাংশ ক্ষেত্রে সমস্যাটা বারে বারে ফিরে আসে । বারবার অসুবিধা হয় এমন অর্ধেকেরও বেশি রোগীর ক্ষেত্রে মেরুদন্ডের ব্যথা তেমন কষ্টদায়ক নয় । তবে বাকি রোগীদের ২৫ শতাংশ ও ১৪ শতাংশ কিন্তু যথাক্রমে তীব্র কোমর ও ঘাড়ের যন্ত্রণা ভোগ করে থাকেন ।
আমাদের শিরদাঁড়া তৈরি ৩০টি ক্যারামের খুঁটির মতো হাড় দিয়ে যা সাজানো থাকে একটির । ওপর একটি । এই হাড়গুলোকে বলে ভার্টিব্রা বা কশেরুকা । মোট ৭টি ভার্টিব্রা থাকে ঘাড়ে , যাদের বলে সারভাইকাল ভার্টিব্রা বা ঘাড়ের হাড় । বুকের কাছে থাকে ১২টি , যাদের বলে থোরাসিক ভার্টিব্রা । কোমরে থাকে ৫টি , যাদের বলে লাম্বার ভার্টিব্রা । কোমরের নীচে থাকে আরও পাঁচটি ভার্টিব্রা যারা একসঙ্গে জুড়ে তৈরি করে স্যাক্রাম । এই স্যাক্রামের শেষে আঙুলের ডগার মতো ক্ষয়গ্রস্ত একটি ভার্টিব্রা থাকে যা আসলে কয়েকটি ছােট হাড়ের সমষ্টি । এই ছোট হাড়গুলিকে একটি হাড় ধরে নিলে আমাদের শিরদাঁড়ার মোট হাড়ের সংখ্যা ত্রিশটি । দুটি ভার্টিব্রার মধ্যে থাকে ইন্টার ভাটিব্রাল ডিস্ক । এগুলি দেখতে অনেকটা জেলি ভরা চাকতির মতো । এই ডিস্কগুলো থাকার জন্য আমরা সামনে পিছনে ঝুঁকে এপাশ – ওপাশ করতে পারি ।
প্রত্যেকটি ভার্টিব্রার মধ্যে থাকে গোলাকার একটি ফাঁকা অংশ । এই ফাপা অংশগুলো মিলিয়েই তৈরি হয় স্পাইনাল ক্যানাল । যার মধ্যে দিয়ে নেমে আসে স্পাইনাল কর্ড বা সুষুম্না কান্ড । আর এই স্পাইনাল কর্ড থেকেই অসংখ্য স্নায়ুর শাখা – প্রশাখা ছড়িয়ে পড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে ।
শিরদাড়া শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ । শুধু ভার্টিব্রা তো নয় , বিভিন্ন পেশি , লিগামেন্ট সবাই মিলে শিরদাঁড়ার কাজ করে । দাড়ানো, হাঁটা, বসা, পাশ ফেরা ছাড়াও পুরো শরীরের ভার বহন করা , ছন্দমাফিক চালনা ,করা , এসবই শিরদাড়ার কাজ । এর সাহায্যেই আমরা শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখি । একদিকে ঝোকার সময়ে যেমন সেদিকেই পেশিগুলোর ক্রমশ সংঙ্কোচন হয় , তেমনি উল্টোদিকের পেশিগুলো ক্রমশ প্রসারিত হতে থাকে । এভাবেই ভারসাম্য রক্ষার ফলে স্পাইনাল কর্ড ও বিভিন্ন নার্ভ নানা আচমকা আঘাত থেকে বাঁচে , তাই শিরদাঁড়া সত্যিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
শিরদাড়ার সমস্যা ও উপশম
শিরদাঁড়ার কোনও অংশে সমস্যা দেখা দিলে ঘাড় , পিঠ , কোমর , পা নানা অংশে ব্যথা হতে পারে । ঘাড়ে ব্যথা হল শিরদাঁড়া নিয়ে সবচেয়ে প্রচলিত সমস্যা । প্রধানত চারটি কারণে এটি হয় স্পন্ডাইলোসিস , ফাইব্রোসাইটিস , হাইপারটেনশন ও অ্যাংজাইটি । এছাড়া আরও নানা কারণ থাকতে পারে ।
সটকা লাগা: এটি খুব প্রচলিত সমস্যা পরিভাষায় রোগটির নাম অ্যাকিউট সারভাইকাল ডিস্ক সিনড্রোম । এই সমস্যা ঘাড়েই বেশি দেখা যায় । হঠাৎ ঘাড় ঘােরাতে গিয়ে কিংবা কোনো ভারী জিনিস তুলতে গিয়ে সমস্যা আসতে পারে । ডিস্কের মধ্যে জেলির মতো যে পদার্থ থাকে তা সামান্য বাইরে এসে নার্ভে চাপ দিলে এই সমস্যা দেখা দেয় । গরম সেঁক ও বিশ্রাম নিলে এই ধরনের ব্যথা দিন সাতেকের মধ্যে ভালো হয়ে যায় ।
শিরদাঁড়ার জন্মগত ত্রুটি
শিরদাড়ার সাধারণত চার ধরনের জন্মগত ত্রুটি দেখা যায় ।
স্পাইনাবাহফিডা: এক হাজার জন শিশুর মধ্যে একজনের হয় । কোমরের লাম্বার ও স্যাক্রাল ভাটিব্রায় নিউরাল আর্চে গ্যাপ থাকে । এতে কোমরে ব্যথা থেকে নিম্নাঙ্গে প্যারালিসিস হতে পারে । রোগ নির্ণয় করে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করা উচিত ।
স্যাক্রালাইজেশন: ৫ নম্বর ভার্টিব্রার দু ‘ পাশে কিংবা একপাশে দাড়া বেড়ে গিয়ে কোমরে অসহ্য ব্যথা হতে পারে । সেক্ষেত্রে ট্রাকশন , ওষুধ দিয়ে , অপারেশন করে সারিয়ে তোলা হয় ।
স্পন্ডাইলোলিসথেসিস: কোমরের লাম্বার ৪ বা ৫ নম্বর ভার্টিব্রা অন্যগুলো থেকে এগিয়ে কিংবা সরে আসে । এই ধরনের জন্মগত চোট লেগে ব্যথা বাড়তে পারে ।
স্কোলিওসিস: অনেক সময় শিরদাঁড়া একেবেঁকে থাকে জন্ম থেকে । তাকে বলে স্কোলিওসিস । বাচ্চারা কোমর বা পিঠে ব্যথার কথা বললে অবহেলা না করে এক জন অর্থোপেডিক্সের পরামর্শ নিন ।
শিরদাড়ার অন্যান্য রোগ
নানা ধরনের সংক্রমণের ফলে শিরদাঁড়ায় অস্টিওমাইলাইটিস রোগটি হতে পারে পায়োজেনিক , টিবি বা সিফিলিস হতে পারে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করালে দিন দশেকের মধ্যেই রোগটি সেরে যায় । এছাড়া শিরদাঁড়ার ভার্টিব্রায় বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট যেকোনো টিউমার হতে পারে । টিউমার হলে জায়গাটি প্রথমে ফুলে উঠবে । তাই শিরদাঁড়ার কোনও অংশ ফুলে উঠলে একদমই অবহেলা করবেন না ।
অস্টিওপোরোসিস: একটু বেশি বয়সে শিরদাঁড়ায় অস্টিওপোরোসিস হতে পারে , যার ফলে হাড ফাপা ও দুর্বল হয়ে যায় । এছাড়া বয়স হলে মানুষ কুঁজো হয়ে যায় । শিরদাঁড়ার হাড় ক্ষয়ে গিয়ে নরম হয়ে যাওয়ার কারণে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে । তবে বেল্ট ব্যবহার করলে ঝুঁকে পড়া ভাবটা অনেকটা কমে যায় ।
শিরদাঁড়ার টিবি: কোমরের উপর দিকে দুটো ভার্টিব্রা অনেক সময়ে টিবির জীবাণু মাইক্রোব্যাক্টেরিয়ামের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে । এই রোগ শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায় । বাচ্চারা খেলাধুলাের পর এই ধরনের পিঠে ব্যথার কথা বলে । বাচ্চাদের ওজন কমতে পারে , খিদে কমে যায় । রোগ অবহেলা করলে প্যারালিসিস হতে পারে । শিরদাঁড়ার টিবি বছরখানেকের চিকিৎসায় খুব সহজেই সারে ।
সায়টিকা: শিরদাড়ার একদম নীচের ভার্টিব্রা স্যাক্রাম দিয়ে যেনার্ভ রুটগুলো বার হয় সেগুলোকে একসঙ্গে বলা হয় সায়টিকা নার্ভ । এটি আবার নানা শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে ছড়িয়ে পড়েছে কোমর থেকে পায়ের গোড়ালি অবধি পেশির অংশতে । কোনো কারণে শিরদাঁড়ায় কোনো আঘাত লাগলে , ডিস্ক প্রোলান্স হলে , শিরদাঁড়ায় টিউমার হলে , নার্ভে চাপ পড়লে সায়টিকা পেন হতে পারে । সায়টিকার উপসর্গ হল কোমরে ব্যথা । এইব্যথা ক্রমশ পায়ের দিকে নামে । অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাহায্যে চিকিৎসা করলে রোগ সারে ।
স্লিপ ডিস্ক: ডিস্কের দুটিঅত্যন্ত প্রয়ােজনীয় অংশ যেমন অ্যানিউলাম ফ্রাইবোসাস অনেক কারণে ক্ষয়ে যেতে পারে । পুষ্টির অভাব , ধূমপান সহ নানা নেশা , পেশাগত কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিরদাড়ায় চাপ , অতিরিক্ত দেহের ওজন এবং বার্ধক্যজনিত কারণে ডিস্কের জেলির মতো অংশ বেরিয়ে আসতে পারে । আর একবার বেরিয়ে এলে স্বাভাবিক হয় না । এটা অনেকটা টিউব থেকে টুথপেস্টের বেরিয়ে আসার মতো । একে বলে স্লিপড ডিস্ক । এই জেলি শিরদাঁড়ার চারপাশের নার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করে । শুরু হয় ব্যথা । ঘাড়ে , পিঠে , কোমরে — শিরপাড়ার । যেকোনো জায়গাতেই এটা হতে পারে । ব্লিউ ডিস্কের চিকিৎসায় শিরদাঁড়ার ওপর চাপ কমাতে হবে । ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে পিঠের মাংসপেশিগুলোকে সবল করতে হবে । স্লিড ডিস্কের ক্ষেত্রে অনেকসময় হাতের বা পায়ের আঙুলে টান ধরে ঝিনঝিন করে । কারণ নার্ভ রুটের ওপর চাপ পড়ে । তার ফলে দেখা দেয় সমস্যা ।
স্পন্ডাইলোসিস: এই রোগের ক্ষেত্রে হাড়ের ক্ষয় দেখা যায় । ঘাড়ে হলে বলে সারভাইকাল এবং কোমরে হলে লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস । শিরদাঁড়ার এই দুটো অংশ সব থেকে বেশি নড়াচড়া করে বলে এখানেই হাড়ের ক্ষয় বেশি হয় । শিরদাঁড়ায় ক্রমাগত চাপ পড়ার ফলে একটু একটু করে বিভিন্ন ভার্টিব্রা ক্ষয়ে যেতে থাকে । বিশেষ করে যারা লেখাপড়ার কাজ করেন । যেমন ক্লার্ক , টাইপিস্ট , লেখক ,টেলারিং কর্মী এইসব মানুষের ঘাড়ের পেশিতে , হাড়ে চাপ পড়ে । ক্ষয়ে যেতে থাকে পেশি ও হাড় । ভারী মাল বইতে গিয়ে মুটে – মজুরদের মধ্যেও এটা হতে পারে । এই রোগের উপসর্গ ঘাড় , কাধ , পিঠ ও কোমরে অসহ্য ব্যথা হয় ঘাড় থেকে হাতে এবং কোমর থেকে ব্যথা ছড়াতে পারে । অনেক সময় আচমকা মাথা ঘুরে যায় , ঘাড় ঘোরাতে শরীর বাঁকাতে ও হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হয় । হাত – পা মাঝে মাঝে ঝিনঝিন করে । রোগ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজন শিরদাড়ার যেখানে ব্যথা হচ্ছে সেখানকার এক্স-রে , রক্তের টিসি , ডিসি , ই.এস . আর , সুগার ইত্যাদির পরীক্ষা । বিশেষ ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান এবং ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং বা এম . আর . আই . ।
স্পন্ডাইলোসিস এড়াতে সতর্ক হতে হবে । যেমন টেবিলে বসে ঝুঁকে পড়াশোনা অন্য কাজ করবেন না । দেহের মেদ কমান । খেয়াল রাখতে হবে শিরদাঁড়ায় যেন বার বার চোট না লাগে , টেনশন কমাতে হবে , প্রতিদিন হালকা কিছু ব্যায়াম , কায়িক পরিশ্রম অবশ্যই করা দরকার ।
শিরদাড়ার সমস্যা এড়াতে কীভাবে বসে কাজ করবেন
টেবিল এবং চেয়ারের হাইট এমন করুন যেন ঝুঁকে বসতে না হয় । কোনো কিছু পড়বার বা লিখবার সময় ঘাড় সোজা রাখুন । ইজিচেয়ার নয় , কাঠের শক্ত সোজা চেয়ারে বসতে হবে । একটানা কাজ না করে ঘণ্টাখানেক বাদে বাদে মিনিট পাঁচেক রিল্যাক্স করুন । বসে বসেই ঘাড়টাকে এপাশ – ওপাশ , সামনে – পিছনে বার কয়েক করুন । কম্পিউটারে কাজ করার সময় চোখের সামনে মনিটর রাখুন , যাতে ঘাড় উঁচু করে কাজ না করতে হয় । ।
কীভাবে গাড়ি চালাবেন: হেলানো সিট চলবে না । সিট থাকবে সোজা । ড্রাইভার ঘাড় সোজা রেখে গাড়ি চালাবেন । স্কুটার বা বাইক চালাবার সময় কুঁজো হবেন না । হেলমেটটা যেন একটু হালকা হয় ।
কীভাবে শোবেন: বালিশ যেটা আপনি মাথায় দেবেন তা নরম হতে হবে । কিন্তু যে গদিতে আপনি শশাবেন সেটাও এমন হবে যা শক্ত ও নরমের মাঝামাঝি । বুকের নীচে বালিশ রেখে ঘাড় নীচু করে কিংবা চিত হয়ে শুয়ে বই পড়বেন না ।
চোখের স্ট্রেন থেকে: আলোতে যারা ঝুঁকে পড়েন , ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভির খুব সামনে থেকে খেলা বা সিরিয়াল দেখেন , যাদের চোখ । ট্যারা চোখে কোনো অসুখ আছে তাদের ঘাড় । ব্যথা করতে পারে । একটানা টেবিল ল্যাম্পের আলোতে পড়বেন না । বরং ৬০ ওয়াটের বালব । টেবিল থেকে চার ফুট উঁচুতে ঝুলিয়ে সেই আলোতে পড়ুন । সম্পূর্ণ অন্ধকার ঘরে টিভি দেখবেন না । ঘরে অন্তত ৪০ ওয়াটের বালব জ্বলবে এবং সেটা থাকবে দর্শকদের পিছনে , টিভি থেকে অন্তত দশ ফুটের দূরত্ব থাকতে হবে ।
ঘরকন্নার কাজ: দাঁড়িয়ে রান্না করতে হবে । মশলা বাটা , কুটননা কাটা টেবিলে রেখে করুন । কাপড় কাচা বসেই করুন , কিন্তু ঘর ঝট দেওয়া – মোছা দাঁড়িয়ে ঝুঁকে না করে বসে বসেইকরা ভালো । কারণ এর ফলে যে ব্যায়ামটা হয় তাতে পেটের চর্বি কমে যায় । ঠাকুর ঘরে পদ্মাসনে বসে ঘাড় সােজা করে পুজো করুন । অল্প সময় নিয়ে প্রণাম করুন । কারণ বেশিক্ষণ ঝুঁকলে ভার্টিব্রায় চাপ পড়ে । ভারী জিনিস তােলার সময় একদম কোমর ভাজ করবেন না । ঝুঁকবেন না , পারলে জিনিসটা দুভাবে ভাগ করে ক্যারি করুন । অনেকসময় জল ভর্তি বালতি অথবা অন্য কোনো জিনিস তুলতে গিয়ে সটকা লাগে ।
পরিবেশ: স্যাঁতাস্যাঁতে পরিবেশ , অতিরিক্ত ঠান্ডার প্রকোপ , এয়ারকন্ডিশনে অভ্যস্ত থাকতে থাকতে ঘাড়ে ব্যথা ও পেশির আড়ষ্টতা দেখা যায় ।
কী খাবেন না : সব ধরণের রেড মিট , শিম , মিষ্টি পাউরুটি , পালংশাক , মুসুর ডাল , ঘি – মাখনযুক্ত ফ্যাটি ফুড কম খেতে হবে ।
ওজন কমাতে হবে: কোনো জিমে ভর্তি হয়ে যান । ওখানে ফ্রিহ্যান্ড ও মেশিনপত্রের সাহায্যে ব্যায়াম করতে পারবেন । ওরা আপনার ওজন , উচ্চতা , বয়স ও কাজের ধরন অনুযায়ী ডায়েট চার্ট করে দেবেন ।
শিশুদের বেলায় ঘাড় সোজা করে শশায়াবেন । কোলে নেওয়ার সময় অবশ্যই ঘাড়ের তলায় হাত রাখবেন । বেশি জোরে জোরে ম্যাসাজ করবেন না । কারণ এতে মাংসপেশি ছিড়ে যেতে পারে ।
সেলুনে ম্যাসাজ: অনেকে সেলুনে চুল কাটার সময় ম্যাসাজ করান । কিন্তু যারা চুল কাটে তারা ঠিকমতো ঘাড়ের অ্যানাটমি না জানার কারণে মাংসপেশি ছিড়ে হতে পারে ফাইব্রোসাইটিস ।
শিরদাঁড়ার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন আসন করুন । ঢিলেঢালা পোশাক পরে ঘরের মেঝেতে শতরঞ্চি পেতে ট্রেনারের । সহায়তায় আসন করুন । আসনের মধ্যে শলভাসন , ভুজঙ্গাসন , পবনমুক্তাসন , ধনুরাসন , বজ্ৰাসন ইত্যাদি । শিরদাড়ার সমস্যায় ম্যাসাজ ভালো কাজ দেয় ঠিক কথা , কিন্তু খুব বেশি ফোলা অংশে ম্যাসাজ কখনোই নয় ।
নানা ধরনের তাপ দেওয়া হয় , শুকনো গরম সেকে অনেকের ভীষণ ভালো কাজ হয় । গরম ও ঠান্ডা জলের সেঁকেও কিন্তু ব্যথা নিরাময় হয় । হটপ্যাডও পাওয়া যায় । নানা মডেলে এই প্যাড পাওয়া যায় ।
শিরদাড়ার ব্যথায় আকুপ্রেসার ও আকুপাংচার করলে ভালো ফল পাওয়া যায় । শিরদাড়ার চোটে যদি হাড় না ভেঙে থাকে , আকুপ্রেসার ও আকুপাংচার করলে দ্রুত ব্যথা কমে যায় ।
তবে সবসময় খেয়াল রাখা উচিত যেকোনো ওষুধ কিবা ব্যবস্থা নিজের খেয়াল – খুশিমতো নয় , অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চলা উচিত ।