স্বাস্থই মানুষের সম্পদ। এই কথাটা আমরা সবসময় শুনে এসেছি। টাকা, সম্পত্তি, বাড়ি, গাড়ি বারবার এলেও সুস্বাস্থ্য সবসময় ধরে রাখা কষ্টের বিষয়। বিশেষত আমাদের এই রোজকার ব্যস্ত জীবনে কাজের চাপ আমাদেরকে বাকি খেয়াল রাখার কথা ভুলিয়ে দেয়। তাই সারাদিনের কাজের ফাঁকে যেটুকু সময় পাওয়া যায়, আমরা তার মধ্যেই নিজেদের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি। খাওয়াদাওয়ার অনিয়মকে ডায়েটের শাসনে বাধার চেষ্টা করি। কিন্তু ঠিক কিভাবে এগোনো উচিত তা বুঝে উঠতে পারি না। রোজকার খাদ্যতালিকায় কি কি রাখা উচিত আর কি কি বাদ দেওয়া উচিত, তা নিয়েও চিন্তিত হতে হয়। কেউ অতিরিক্ত মোটা হওয়ার জন্যে খাওয়াদাওয়াকে দোষ দিয়ে থাকেন। কিন্তু ঠিক কি ধরনের ডায়েট আপনাকে পরিমিত পুষ্টির জোগানের সাথে পরিশীলিত খাদ্যাভ্যাস দেবে তা নিয়েও ভাবতে হয়। অনেকেই শুনে থাকেন যে আমাদের স্বাস্থের জন্যে ফ্যাট ক্ষতিকারক। ডিম বা রেডমিট কোলেস্টেরল বাড়ার কারন। তাহলে কি খাবেন এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়লে একটা সহজ ডায়েট এখনকার দিনে বহুল জনপ্রিয় হয়েছে। এর নাম হল low carb diet।
কি এই নতুন ডায়েট এই নতুন ডায়েটের প্রধান এবং মূল বৈশিষ্ট্য হল স্বাস্থকর ফ্যাটের আত্তিকরন করা, উচ্চ মানের প্রোটিন খাওয়া এবং সতেজ সবজি খাওয়া যাতে কম পরিমানে কার্বোহাইড্রেট শরীরে যায়। এটাকে অনেকে কেটোজেনিক ডায়েট বলেও থাকেন। পার্থক্য হলো এই ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ নেই। যেখানে কেটোজেনিক ডায়েটে ৫০গ্রামের বেশি খাওয়া যায় না।
কাদের জন্য উপকারী
যারা নিজের ওজন কমাতে চান বা নিজের ওজন ঠিক ভাবে ধরে রাখতে চান তারা একে নিজের করে নিতে পারেন। এই ডায়েট শরীরের হজম ক্ষমতা ঠিক করার ক্ষেত্রেও উপকারে লাগে। টাইপ – 2 ডায়বেটিস রোগীদের জন্যে, এমনকি আজকের দিনে অন্যান্য জটিল রোগের জন্য রোগীদের এই ডায়েট অনুসরণ করতে বলা হয়।
কাদের করা উচিত নয়
যারা নতুন মা হতে চলেছেন বা যারা গর্ভধারণ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই ডায়েট নেওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। একইভাবে যাদের কিডনির সমস্যা আছে তারা এই ডায়েট বেছে নেওয়ার আগে ভালো করে জেনে নিন এর ব্যাপারে। যাদের হার্টের সমস্যা আছে তারাও এই ডায়েট করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই ডায়েটের কোনো সীমাবদ্ধতা আপনার শরীরের কোন জটিলতা সৃষ্টি করবে কিনা তা জেনেই এই ডায়েট বেছে নিন।
কি কি খাবেন
প্রতিটা ডায়েটে নিজস্ব কিছু খাদ্যতালিকা আছে। এই ডায়েট তার ব্যতিক্রম নয়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কি কি খাওয়া উচিত। সবজি যাতে স্টার্চ কম আছে, চিকেন বা মিট, মাছের ক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ, ডিম, আলমন্ড বাদাম, তরমুজ। এছাড়াও অন্যান্য ফল সবজি আছে যা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ মেপে খাওয়া যেতে পারে।
কি কি খাবেন না
প্রসেসড খাবারকে একেবারেই না বলুন। স্টার্চ কম করার জন্যে ভাত এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার কম খাওয়া বা না খাওয়ার চেষ্টা করুন। বেশি পরিমাণে স্টার্চ আছে এমন ফল যেমন আঙ্গুর বা কলা এড়িয়ে যান। চকলেট, আইসক্রিম পছন্দের হলে এবার তাদেরকে বিদায় দেওয়ার চেষ্টা করুন।
লাভ কেন করবেন এই ডায়েট?
আগে একবার বলেছি। ওজন কমাতে সাহায্য করে কারণ কম পরিমাণে স্টার্চ এবং কার্বোহাইড্রেট যায়। ফলে শরীরের জ্বালানি হিসাবে ফ্যাটের ক্ষয় অনেক বেশি হয়। ব্লাড সুগারলেভেল অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখে। কম থাকলে ত প্রায় নির্মূল করতে সাহায্য করে। পেটের সমস্যা, বিশেষত যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে বা যারা IBS এ ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রেও আরাম দিতে পারে। হজম ক্ষমতার উন্নতি করে।