যাদের কফ হয় তাদের জন্য তেজপাতা উপকারী। তেজপাতা শুধু রান্নাতেই ব্যবহার করা হয়। এই পাতার আছে অনেক রোগের আরোগ্য গুণ। একে বলা হয় তেজপাতা উষ্ণবীর্য (কড়া), পাচক (খাবার হজম করায়), আগ্নেয় বা খিদে বাড়িয়ে দেয়, মুখশুদ্ধি করে, কফ, বায়ু, অর্শ, সর্দি, বমিভাব, অরুচি ও বিষদোষ নাশ করে। আরও বলা হয় তেজপাতা মধুর, কিছু তীক্ষ, উষ্ণ, লঘু।
হাকিমি বা ইউনানি মতে, তেজপাতা মস্তকের পোষণ করে, লিভার ও প্লীহার অসুখে উপকারী, মূত্রবৃদ্ধি করে। বৈজ্ঞানিক মতে, তেজপাতা ঘাম নিঃসারণ করায়, মূত্রবৃদ্ধি করে, কফ নাশ করে, স্তন্য বৃদ্ধি করে এবং মলশুদ্ধি করে।
সুস্থ থাকতে তেজপাতার ব্যবহার:
১. কফ সারাতে: আমপ্রধান রোগে এবং কফপ্রধান রোগে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
২. পেটের অসুখে: বদহজম, উদররোগ, বাত, পেটব্যথা, বারবার পায়খানার চাপ পাওয়া ইত্যাদি হজম-সংক্রান্ত সব অসুখে এবং সব রকমের কফ রোগে তেজপাতা উপশম করে।
৩. জ্বর সারে: তেজপাতার ক্বাথ খাওয়ালে ঘাম বেরোয়, প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। জ্বর আসার ঠিক আগে ক্বাথ পান করালে শরীরের আমের দোষ দূর হয়, জ্বর ছাড়ে এবং জ্বর আর আসে না।
৪. ঘুস ঘুসে জ্বরে: তেজপাতা আর তার সঙ্গে কাঁকরোলের সেঁকা বীজের চুর্ণ খাওয়ালে ঘুষঘুষে জ্বর সারে সাধারন জুরও ছেড়ে যায়।
৫. সর্দি সারাতে: তেজপাতা গাছের ছাল আর পিপুল চূর্ণ মধু মিশিয়ে চাটিয়ে দিলে কফের উৎপত্তি বন্ধ হয়, সর্দি সেরে যায়, হজমের কাজ ভাল হয়।
৬. শ্বাস কষ্ট কমাতে: তেজপাতা গাছের ছাল ও পিপুল চূর্ণের সঙ্গে আদার রস ও মধু মিশিয়ে চাটলে শ্বাসরোগের উপশম হয়।
৭. মেয়েদের শরীরের দৃষিত পদার্থ বের করতে: তেজপাতা গাছের ছাল প্রমেহ রোগেও খাওয়ানো হয়। যদি গর্ভাশয়ের শিথিলতার জন্যে গর্ভাশয়ের দৃষিত পদার্থ বাইরে বেরিয়ে না যায় তাহলে দারচিনি, তেজপাতা আর ছোট এলাচ চূর্ণ করে বা এগুলির ক্বাথ করে খেলে সুফল পাওয়া যায়।
৮. বাতে উপশম পেতে: সন্ধিস্থলের বাতে বা গেঠের বাতে তেজপাতার ছাল গুঁড়া করে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যাবে।
তথ্যসূত্রঃ
১. সাধনা মুখোপাধ্যায়: সুস্থ থাকতে খাওয়া দাওয়ায় শাকসবজি মশলাপাতি, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, নতুন সংস্করণ ২০০৯-২০১০, ২৩৯-২৪০