জীবনযাপন, পত্রিকায় প্রকাশিত, স্বাস্থ্য টিপস্‌

মৌসুম পরিবর্তনের সময় ভালো থাকার কৌশল

বসন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে গ্রীষ্মের উত্তাপের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ সময় পোশাক পরিচ্ছেদ থেকে শুরু করে খাবারে কিছুটা পরিবর্তন আসে। পরিবর্তন আসে মুখের স্বাদেও। শরীরের অভ্যন্তরেও পরিবর্তন শুরু হয় এ সময়। ঋতু পরিবর্তনের সময় আমাদের শারীরিক প্রতিক্রিয়া প্রায়শই অনেক সূক্ষ্ম হয়। পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে সর্দি কাশি, ঠাণ্ডা লাগা, গলা বসা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বর, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডায়েরিয়া দেখা দেয় এবং অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বেড়ে যায়।

ঋতু পরিবর্তনজনিত সমস্যাগুলো আসার পেছনে সবচেয়ে দায়ী আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম। যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল, তারাই ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। কাজেই এই সময় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেন সবল থাকে, সে দিকে নজর দেয়া জরুরি। এর জন্য প্রাকৃতিক কিছু উপায় আছে।

শরীর আর্দ্র রাখা

ঋতু পরিবর্তনের বিষয়টি প্রথম টের পায় আমাদের ত্বক। শীতের সময় ত্বক শুষ্ক হবে, গরমের সময় ঘাম হবে। শীতে শুষ্ক ত্বকের জন্য তেল, লোশন, ক্রিম, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করি। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বক সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়। এর মানে হলো যে ঋতু ও আবহাওয়া পরিবর্তন আমাদের শরীরে একটি ধাক্কার মতো কাজ করে। বসন্তে শীতের প্রভাব কাটিয়ে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়া স্বাভাবিক। কাজেই এই সময় পানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রতিদিন একটি করে শসা খেতে পারলে খুবই ভালো। এতে শরীর আর্দ্র থাকবে।

ক্যালোরি পোড়াতে হবে

ঋতু পরিবর্তনের এই সময় অনেকেরই ওজন বেড়ে যায়। শীতের মাসগুলোয় শরীরে চর্বি সঞ্চয় হয়। আমাদের শরীর তাদের ইনস্যুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ফলে আমাদের লিভার চর্বি উৎপাদন বাড়ায়, যাতে আমরা আমাদের টিস্যুতে চর্বি জমা করতে পারি এবং শীতের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে পারি। কাজেই গরম আসার আগমুহূর্তে সেই সঞ্চিত চর্বি খরচ করা জরুরি। এর জন্য সঠিক ডায়েট ও ব্যায়াম সর্বোত্তম কৌশল। হাঁটা, দৌড়ানো বিপাককে উদ্দীপিত করতে, ক্যালোরি পোড়াতে বিশেষভাবে কার্যকর।

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিক রাখার পথ্য

লেবু পানি হতে পারে ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সবল রাখার বড় হাতিয়ার। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি, সঙ্গে এক টেবিল চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করতে পারেন। পাশাপাশি দুপুরের দিকে টক ফল খেলে ভালো উপকার মিলবে।

লেখক: খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেসার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *