শীত আসলে সাইনাসের সমস্যা বাড়ে। অনেকে বেশ কষ্টও পান। তবে একটি প্রাকৃতিক টনিক এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এই শীতে সেটি সেবন করে দেখতেই পারেন।
সাইনাসের সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। শীত এলে এই সংক্রমণ আরও বাড়ে। বাড়ে ভোগান্তি। সংক্রমণের কারণে প্রদাহের সৃষ্টি হয়; যা চার সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়। কখনো কখনো কোনো কিছু করা ছাড়াই চলে যায়; আবার কখনো ব্যথা এত তীব্র হয় যে পৃথিবীর সব আনন্দও বিষময় মনে হয়।
সাইনাস সংক্রমণ বা সাইনোসাইটিস, অনেকের বারবার হতে পারে। সাইনাস গহ্বরের দেয়ালগুলো স্ফীত হলে এই বিরক্তিকর অবস্থা হয়। ফলে এমন লক্ষণ দেখা দেয়, যা দৈনন্দিন জীবনকে অস্বস্তিকর করে তুলতে পারে। যদিও ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধগুলো অস্থায়ী পরিত্রাণ দিতে পারে; কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান দিতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে অপারেশনের মতো জটিল কাজটিও করতে হতে পারে।
আমাদের দেশজ কিছু নিয়ম আছে, যা করলে আপনি সাইনাসের সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারেন। বিশেষ করে দুর্ভোগের আগেই প্রাকৃতিক চিকিৎসা অনুসরণ করতে পারলে সমস্যা আসবেই না। অনেক ক্ষেত্রে মূল সমস্যা চিহ্নিত করে চিকিৎসা না নিতে পারলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অনেক ধরনের টোটকা প্রচলিত আছে, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। এখানে যে পদ্ধতি বলা হয়েছে, তা প্রাকৃতিক এবং আপনার কোনো ক্ষতি করবে না।
আমাদের দেশজ কিছু নিয়ম আছে, যা করলে আপনি সাইনাসের সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারেন। বিশেষ করে দুর্ভোগের আগেই প্রাকৃতিক চিকিৎসা অনুসরণ করতে পারলে সমস্যা আসবেই না। অনেক ক্ষেত্রে মূল সমস্যা চিহ্নিত করে চিকিৎসা না নিতে পারলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অনেক ধরনের টোটকা প্রচলিত আছে, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। এখানে যে পদ্ধতি বলা হয়েছে, তা প্রাকৃতিক এবং আপনার কোনো ক্ষতি করবে না।
সাইনাসের সমস্যা হওয়ার কিছু প্রধান কারণ
- ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ: সাধারণ সর্দি, ফ্লু বা অন্যান্য সংক্রমণ সাইনাসে ছড়িয়ে পড়লে সাইনোসাইটিস হতে পারে।
- অ্যালার্জি: ধুলো, পরাগ, পশম ইত্যাদি থেকে অ্যালার্জি হলে সাইনাসে প্রদাহ হতে পারে এবং শ্লেষ্মা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- নাকের অবকাঠামোগত সমস্যা: নাকের সেপ্টাম টিস্যুতে বিচ্যুতি, নাকের পলিপ ইত্যাদি কারণে সাইনাসের বর্জ্য ভালোভাবে নিষ্কাশন না হওয়ায় সংক্রমণ হতে পারে।
- দুর্বল ইমিউনিটি: রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকলে শরীর সহজেই সংক্রমণের শিকার হতে পারে।
- পরিবেশদূষণ: বায়ুদূষণ, ধুলোবালি ইত্যাদি সাইনাসে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
- দাঁতের সংক্রমণ: কখনো কখনো দাঁতের সংক্রমণ সাইনাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- এইচআইভি বা ক্যানসারের চিকিৎসায় কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের ব্যবহার: এ ধরনের ওষুধ ইমিউনিটি কমিয়ে দিতে পারে এবং সাইনাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- ধূমপান: ধূমপান সাইনাসের আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
সাইনাসের সমস্যা হলে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে
• নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া
• মাথাব্যথা, বিশেষ করে কপাল ও গালের পাশে
• সর্দি
• হাঁচি
• চোখে জ্বালাপোড়া
• গন্ধশক্তি কমে যাওয়া
• দাঁতের ব্যথা
• জ্বর
রান্নাঘরে থাকা কিছু উপকরণ দিয়েই প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
উপকরণ
১/৪ কাপ আপেল সিডার ভিনেগার
১ টেবিল চামচ কালো গোলমরিচের গুঁড়া
১ টেবিল চামচ মধু
১টা টাটকা লেবুর রস
আধা কাপ পানি
যা করবেন
আধা কাপ পানি ফুটিয়ে একটি মগে ঢেলে নিন; তাতে আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন, মিশ্রণটি সামান্য ঠান্ডা হতে দিন। আপেল সিডার ভিনেগার রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে শক্তিশালী করার এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নত করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। এর সঙ্গে কালো গোলমরিচের গুঁড়া ও মধু যোগ করার আগে মধুতে পুষ্টিগুণ সংরক্ষণ করতে আলতো করে নাড়ুন। সবশেষে, লেবুর রস দিন এবং আরও একবার নাড়ুন। লেবু ভিটামিন সির একটি শক্তিশালী উপাদান, যা শরীরকে সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যস হয়ে গেল সাইনাসের প্রাকৃতিক টনিক।
এই টনিক অর্ধেক করে দিনে দুবার পান করুন। সকালে খালি পেটে একবার এবং রাতে শোবার আগে একবার। নিয়মিত সাত দিন করতে পারলেই দেখবেন আপনার নাক কী জানান দিচ্ছে, আপনার কণ্ঠস্বর কতটা স্পষ্ট হয়েছে। সাইনাস সংক্রমণের লক্ষণগুলো অদৃশ্য না হওয়া পর্যন্ত এই টনিক সেবন করতে থাকুন।
এ মৌসুমে প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এই টনিক ব্যবহার করে দেখুন। এটা বড়–ছোট সবাই সেবন করতে পারবেন। এমনকি যাদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরাও; মধুর কারণে সুগার লেবেল বাড়লেও ভিনেগারের জন্য এটা সমস্যা করবে না।
লেখক: খাদ্য ও পথ্য; প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
ছবি: পেকজেলসডটকম