ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসি একটি আঁশযুক্ত ফসল। আলফা-লিনোলিক অ্যাসিডসহ তিসি ডায়েটরি ফাইবার এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস। আসুন জেনে নিই তিসি কী কী উপকার করে-
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: আমাদের পেট, ইন্টেস্টাইন, কোলনের দেয়ালে লেগে থাকা দূষিত উপাদান বের করতে তিসি অনন্য ভূমিকা পালন করে। অন্ত্রের ভেতরে থাকা জ্বলীয় পানি যা বের হওয়ার কথা কিন্তু বের হয়নি, তা শোষণ করার ক্ষমতা রয়েছে এই তিসির।
কোলেস্টেরল ব্যালান্স করে: কোলেস্টেরল আমাদের শরীরে প্রয়োজন, কিন্তু তা থাকতে হবে মাত্রা অনুযায়ী। তিসির গুণ হলো আমাদের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল কমাবে, আর ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল বাড়াবে। তিসি কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল বা ‘খারাপ’) কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে: তিসি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্ত্রের গতি বাড়ায়। এর ফলে হজম ভালো হয়। আর বিপাকীয় উন্নতির কারণে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রিত হয়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে: প্রতিদিন নিয়মিত তিসি খেলে শরীরের ওজন কমবে, বডি মাস ইনডেক্স (BMI) এবং প্রাপ্তবয়স্কদের কোমরের আকার কমবে।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: তিসি খাওয়ার কারণে উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন যারা, তারা উপকার পেতে পারেন। বিশেষ করে তরুণ বয়সে যারা সদ্য ভুল খাবার খেয়ে উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন এবং এখনো নিয়মিত ওষুধ খাওয়া শুরু করেননি তারা তিসি খেতে পারেন এবং এতে উপকার পাবেন।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে: তিসি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস হওয়ার কারণে উচ্চরক্তচাপের জন্য হার্টের ক্ষতি হওয়া থেকে বেঁচে যাবেন। হার্ট ভালো থাকবে।
মায়েদের নানা সমস্যায়: স্তনে ব্যথা ও মাসিক চক্রে সমস্যা থাকলে তিসি খেলে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া তিসি লুপাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের কিডনি ফুলে যাওয়া (প্রদাহ) প্রতিহত করে।
কীভাবে খাবেন, কতটুকু খাবেন: তিসি প্রথমে ফ্রাইপ্যানে একটু টেলে নেবেন, তারপর সেটি বয়ামে সংরক্ষণ করবেন। খাওয়ার সময় এক টেবিল চামচ তিসি ভাতের সঙ্গে, সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খাবেন। তিন মাস নিয়মিত তিসি খেলে উপকার পাওয়া যাবে। তিসি তেলজাতীয় হওয়ায় বেশি দিন রাখতে পারবেন না। তাই এক সপ্তাহে যতটুকু খাবেন, ততটুকু টেলে নিতে পারেন। প্রতিদিন ৩০ গ্রাম তিসি খাওয়া হিতকর।
লেখক: খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেসার বিশেষজ্ঞ প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র