রোগ-ব্যাধি

বাহ্যিক হেমোরয়েড : কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ

মলাশয়ের নীচের অংশ বা মলদ্বারের শিরাগুলি ফুলে যাওয়াকেই অর্শ্বরোগ বা পাইলস বা হেমোরয়েডস বলা হয়। পাইলস হলে মলত্যাগে অত্যন্ত সমস্যা হয়। মলত্যাগের সময় রক্তপাত, জ্বালা, মলদ্বারে ব্যথা এবং পায়ুপথের বাইরের দিকে ফোলা ফোলা ভাব অনুভূত হয়, ফলে বসতে সমস্যা হয়। সাধারণত আমরা জানি দু’রকমের পাইলসের কথা, যথা- অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক। আমরা আজ বাহ্যিক হেমোরয়েডস সম্পর্কে জানব।

বাহ্যিক হেমোরয়েড হওয়ার কারণ অন্ত্রের গতিবিধি চলাকালীন যখন অত্যাধিক চাপ পড়ে তখন সেই চাপের কারণে মলদ্বারের চারপাশের শিরাগুলি প্রসারিত হয়ে ফুলে যায়, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়ারিয়ার কারণে ঘটে। কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ দেওয়া, মিলনের সময় মলদ্বারের নীচে অত্যাধিক চাপ দেওয়া, অতিরিক্ত ওজন, কম ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ভারী বস্তু বহন করা, ইত্যাদি কারণে বাহ্যিক হেমোরয়েডস বিকাশ করতে পারে। বাহ্যিক হেমোরয়েড মলদ্বার থেকে বেরোয় এবং অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয় কারণ মলদ্বারের বাইরের অংশ খুব সংবেদনশীল হয়।

লক্ষণ
১) রক্তপাত
২) পায়ুপথে চুলকানি, জ্বালা
৩) ব্যাথা, অস্বস্তি
৪) মলদ্বারের চারপাশ ফোলা
৫) মলত্যাগে রক্ত পড়া

ঝুঁকি

১) পারিবারিক ইতিহাস
২) দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা বা দাঁড়ানো
৩) কম ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া
৪) গর্ভাবস্থা

রোগ নির্ণয়
এক্ষেত্রে, শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে হেমোরয়েড নির্ণয় করা হয়। পায়ু ও তার চারপাশ ভালভাবে দেখে বা পরীক্ষা করে বাহ্যিক হেমোরয়েড নির্ণয় করা যেতে পারে। এই রোগে যে পরীক্ষাগুলি করা হতে পারে, সেগুলি হল – প্রক্টোস্কপি, কোলনস্কপি, ডিজিটাল রেক্টাম পরীক্ষা, অ্যানোস্কপি, ইত্যাদি।

চিকিৎসা

রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে বাহ্যিক হেমোরয়েড কয়েকটি উপায়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে-
১) যদি বাহ্যিক হেমোরয়েড বেশি বাড়াবাড়ি না হয় তখন চিকিৎসক ক্রিম, প্যাড এবং মলম দেয়। এগুলিতে হাইড্রোকর্টিসন জাতীয় উপাদান রয়েছে যা চুলকানি থেকে মুক্তি দেয়।
২) আর, যদি বাহ্যিক হেমোরয়েড খুব বেশি বাড়াবাড়ি হয় তখন শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে হেমোরয়েড কেটে বাদ দেওয়া হয়। গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য হেমোরোয়েডেক্টমি হল একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি।

প্রতিরোধ

১) ফাইবারযুক্ত খাবার খান
২) প্রচুর জল পান করুন
৩) নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
৪) বেশিক্ষণ বসে থাকা বা দাঁড়ানো এড়িয়ে যান
৫) যখনই ইউরিন পাবে তখনই যান
৬) মলত্যাগে চাপ দেবেন না
৭) ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন

এ বিষয়ে পরামশের্র জন্য যোগাযোগ করুন : আলমগীর আলম, 29 বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, তৃতীয় তলা, ঢাকা, কল – 01611010011

Leave a Reply