কাঁঠালে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিংক, নায়াসিনসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান। অন্যদিকে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় কাঁঠাল মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পুষ্টিমান হিসেবে মোট কার্বোহাইড্রেট ২৪ গ্রাম, বায়াটারি ফাইবার ২ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম, ভিটামিন এ ২১৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৬.৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ৩৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০৩ মিলিগ্রাম ও ক্যালরি পাওয়া যায় ৯৪ মিলিগ্রাম। খনিজ পদার্থ ১.১ গ্রাম, শক্তি কিলোক্যালরি ৪৮, আমিষ ১.৮ গ্রাম, শর্করা ৯.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২০ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ১.১১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ২১ মিলিগ্রাম, ক্যারেটিন ৪৭০০ মাইক্রোগ্রাম, আঁশ ০.২ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৮ গ্রাম।
কাঁঠালের উপকারিতা
• কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ নিতান্ত কম। এই ফল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কম।
• কাঁঠাল পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এ জন্য কাঁঠাল উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
• কাঁঠালে প্রচুর ভিটামিন এ থাকায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
• কাঁঠালের অন্যতম উপযোগিতা হলো ভিটামিন সি। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে ভিটামিন সি, যা কাঁঠালে ভরপুর থাকে।
• কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়ন্টেস থাকে, যা একটু দুর্লভ খাদ্য উপাদান, যা সহজেই আলসার, ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম।
• কাঁঠালে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রি- র্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
• টেনশন ও নার্ভাসনেস আমাদের এখন নিত্যসঙ্গী, এই সমস্যা কমাতে কাঁঠাল বেশ কার্যকর।
• বদহজম রোধ করে কাঁঠাল। দীর্ঘদিন ধরে বদহজমজনিত সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁরা নিয়মিত কাঁঠাল খেতে পারেন, তাতে বদহজমের সমস্যা দূর হবে; সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যও হ্রাস পাবে।
• কাঁঠালে বিপুল পরিমাণে আছে ম্যাঙ্গানিজ, যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
• কাঁঠালে বিদ্যমান ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালী করায় ভূমিকা রাখে।
• কাঁঠালে থাকা ভিটামিন বি৬ হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়।
• কাঁঠালে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম কেবল হাড়ের জন্য উপকারী নয়, রক্তসঞ্চালনের প্রক্রিয়ায়ও ভূমিকা রাখে।
• ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়।
• চিকিৎসাশাস্ত্রমতে, প্রতিদিন ২০০ গ্রাম তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী নারী ও গর্ভে থাকা সন্তানের সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়। গর্ভবতী নারীরা কাঁঠাল খেলে তাঁর স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। দুগ্ধদানকারী মা তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
• কাঁঠালে থাকা খনিজ উপাদান আয়রন রক্তস্বল্পতা দূর করে।
কাঁঠাল সবাই খেতে পারেন না। অনেকে গন্ধের জন্য খেতে পারেন না আবার ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের কাঁঠাল খাওয়া একদম বারণ করা থাকে। অথচ ইচ্ছা করলে খেতে পারবেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও। এ ক্ষেত্রে কাঁঠাল খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকালে খালি পেটে। নাশতায় কাঁঠাল খেলে অন্য শর্করা-জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।