কালমেঘ
কালমেঘ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এর অন্য প্রচলিত নাম আলুই। অকেনথেসি বর্গের অন্তর্ভুক্ত এই গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Andrographis paniculata
বর্ণনা
বাংলাদেশ সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে এই গাছ জন্মায়। হিন্দীতে একে বলা “হয়কিরায়াত” বা কখনো “কুলুফনাথ”। এটি একটি বর্ষজীবি উদ্ভিদ। গড় উচ্চতা ১ মিটার। এর শাখা চতুষ্কোণ এবং পাতা বল্লমাকৃতির হয়ে থাকে। এটি একটি বীরুৎ-জাতীয় উদ্ভিদ। ফুল ক্ষুদ্রাকার। অল্প পরিমাণে বিক্ষিপ্ত গুচ্ছে ফুল ফোটে। ১ সে.মি. লম্বা ফুলের রং গোলাপী। দেড় থেকে ২ সে.মি. লম্বা ফল অনেকটা চিলগোজার মতন দেখতে। ভেষজী গুণাবলীর জন্য অনেক স্থানে একে ‘চিরতার ঔষধ’ বলা হয়।
গুনাগুণ
- এর পাতা দিয়ে পচা ক্ষত পরিষ্কার করা হয়।
- এর রস কৃমি নাশক।
- রক্ত আমশায় দূর করে।
- ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে কার্যক্রম জোরদার।
- বহুমূত্ররোগ দের সেরা রেটিং পয়েন্ট এর ঔষুধ
- ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
কালমেঘ পাতার অসাধারণ ৫ টি উপকারিতা:
- ডায়াবেটিস: কালমেঘ পাতা ডায়াবেটিস এর অব্যর্থ ওষুধ। এটি আমাদের শরীরে ব্লাড সুগার এর পরিমানকে কম রাখতে সাহায্য করে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ মতোই এক্ষত্রে এর সেবন করা উচিত।
- ক্যান্সার: কালমেঘ ক্যান্সার নিরাময় এর ক্ষেত্রেও অত্যন্ত্য উপকারী। এর ঔষধি গুন আমাদের শরীরে ক্যান্সার এর কোষগুলিকে সক্রিয় হতে দেয় না বা ক্যান্সারের কোষগুলিকে বাড়তে দেয় না। এটি ক্যান্সার রোগীদের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
- লিভার: লিভার জনিত যে কোনো রকম সমস্যার অব্যর্থ ওষুধ এই কালমেঘ পাতা। এটি লিভার টনিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অতিরিক্ত মদ্য পান, বা অতিরিক্ত কড়া ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে আমাদের লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কালোমেঘ পাতা এর নিরাময়ক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া আজকাল আমাদের খাদ্যাভাস বা ফল ও সবজিতে ব্যবহৃত পেস্টিসাইড আমাদের লিভারকে খারাপ করে দেয়। কালোমেঘের নিয়মিত সেবন এই সমস্যার সবথেকে ভালো সমাধান।
- আর্থারাইটিস ও গাউট: কালমেঘ পাতা আর্থারাইটিস ও গাউট এর ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। ১৫ থেকে ২০টি কালমেঘ পাতার রস করে প্রতিদিন খেলে আর্থারাইটিস বা গাউট এর সমস্যা থেকে দূরে থাকা যেতে পারে।
- জ্বর, সর্দি, কাশি: কালমেঘ পাতা জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা, গলা বসে যাওয়া, টন্সিলাইটিস ইত্যাদি ক্ষেত্রে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কালমেঘ পাতা ভালো করে ধুয়ে হালকা গরম জল মিশিয়ে ছাঁকনিতে ছেঁকে নিতে হবে। এই কালমেঘ পাতার রস যেকোনো রকম ঠান্ডা লাগা জনিত রোগ খুব তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। তবে এর স্বাদ অতন্ত্য তিত্কুতে, তাই রস খাওয়ার সাথে সাথে এক চামচ মধু খেয়ে নিলে ভালো।
অন্যান্য উপকারিতা:
যেকোনো রকম জ্বর বা ক্রনিক ফিভার বা ভাইরাল ফিভার আমাদের শরীরকে খুব দুর্বল করে দেয়, এছাড়া এই সমস্ত রকম জ্বর আমাদের লিভারকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। কালমেঘ পাতার রস আমাদের এইসব রকম জ্বর এর ফলে হওয়া শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। এছাড়া জ্বর এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ লিভারকেও ঠিক করতে সাহায্য করে। এছাড়া এই পাতা ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে।
ছোট বাচ্ছাদের ডায়রিয়া, বা গ্যাস, খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি নানা রকম রোগের ক্ষেত্রে কালমেঘ পাতার রস ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এছাড়া কৃমি হলেও শিশুদের কালমেঘ পাতার রস খাওয়ানো হয়। এর তিৎকুটে স্বাদ কৃমিগুলিকে মেরে ফেলে পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
রক্ত সঞ্চালন
কালমেঘ পাতা রক্তকে পরিশুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ফলত আমাদের ত্বকের নানারকম সমস্যার ক্ষেত্রে কালমেঘ পাতা অত্যন্ত্য কার্যকরী। এছাড়া কালমেঘ পাতা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
আলসার প্রতিরোধক হিসেবে কালমেঘ পাতার রস খাওয়া হয়। কালমেঘ পাতা হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়া এর নিয়মিত সেবন আমাদের শারীরিক শক্তি ও কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। অনিয়মিত মাসিক এর সমস্যা বা এর থেকে হওয়া নানা রকম অবাঞ্চিত সমস্যার ক্ষেত্রে কালমেঘ পাতার রস উপকারী।
তবে গর্ভবতী মহিলাদের কালমেঘ পাতার সেবন একেবারেই উচিত নয়।
সংগ্রহ করতে এখনই যোগাযোগ করুন:
মোবাইল: ০১৭১০ ৯৩ ৫৫ ৪৪
ঠিকানা: ২৯, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ (তৃতীয় তলা), ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।